কলাপাড়ার খবর ডেক্সঃ
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেছেন, ‘মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর লোকেরা বিভিন্ন কৌশলে ইতিমধ্যে ৫৬ হাজার জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেছে। যা আমাদের জন্য কাম্য নয়। এ জন্য আমাদের জনপ্রতিনিধিদেরকে আরও সতর্ক হতে হবে। আমরা মনে করি যাঁরা জনপ্রতিনিধি রয়েছেন, তাঁরা সবকিছু সঠিকভাবে যাচাই করে যেন একজন মানুষকে নাগরিক সনদ অথবা জন্ম সনদ দেন। এতে করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মতো ভূয়া জাতীয় পরিচয়পত্র কেউ আর নিতে পারবেনা।’
কলাপাড়া উপজেলায় স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। রোববার বেলা ১১ টায় কলাপাড়া পৌর শহরের শেখ কামাল স্মৃতি কমপ্লেক্স অডিটোরিয়ামে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
নির্বাচন কমিশনের সচিব আরও বলেন, স্মার্ট ফোন এবং কম্পিউটার-ল্যাপটপের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল করার বিধান চালু করেছে নির্বাচন কমিশন। এমনকি বিকাশ বা এ সংক্রান্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করে মনোনয়নপত্রের নির্ধারিত অর্থও পরিশোধ করতে পারবেন প্রার্থীরা। নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করে বিধায় অ্যাপসের মাধ্যমে ভোট চলাকালে প্রতি ঘন্টায় ভোট প্রদানের তথ্যাদি যে কেউ দেশ এবং বিদেশ থেকে তাঁর মুঠোফোনের মাধ্যমে দেখতে পারবেন। আমরা সে ব্যবস্থাও চালু করেছি।
আরব-আমিরাতসহ দুটি দেশে কর্মরত বাংলাদেশী শ্রমিকদের জন্য পাইলট প্রকল্প হিসেবে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করার উদ্যোগ নেয়ার কথা তিনি জানান।
নির্বাচন কমিশনের বরিশালের আঞ্চলিক কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রকল্প পরিচালক (দ্বিতীয় পর্যায়) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সায়েম, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ুন কবির, পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
নির্বাচন কমিশনের সচিব আরও বলেন, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রত্যেক নাগরিকের এই স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রয়োজন হবে। স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া বাংলাদেশের কোনো নাগরিকই দেশে এবং বিদেশে কোনো ধরণের সুবিধা নিতে পারবেনা। অনেকে মনে করেন ভোটার তালিকা এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র একই জিনিস। আসলে এটা এক জিনিস নয়। ভোটার তালিকায় যাঁর নাম থাকবে, তিনি ভোটার হিসেবে ভোট সংক্রান্ত সকল কাজে অংশ নিতে পারবেন। আর স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে একজন নাগরিক ২২টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সহ ৪৩ ধরণের নাগরিক সুবিধা পাবেন।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, নির্বাচন কমিশন তথ্য সমৃদ্ধ এবং আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেছে। আগামী এক মাসের মধ্য কলাপাড়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভায় নাগরিকদের মধ্যে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. জাহাংগীর আলম কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদারের হাতে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেন। এরপর অনুষ্ঠানে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধা, গণমান্য ব্যক্তিবর্গ, গণমাধ্যমকর্মী, ব্যবসায়ীবৃন্দ, জনপ্রতিনিধিবৃন্দসহ প্রায় ৫০০ জন নাগরিকের মধ্যে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে থাকায় সাংবিধানিক বাধ্য বাধকতার কারণে স্থানীয় পর্যায়ের কোনো রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে অতিথি হিসেবে মঞ্চে উপবিষ্ট করা সম্ভব হয়নি বলে দুঃখ প্রকাশ করেন অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ও পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শারমিন আফরোজ।
#